ad720-90

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মাননা অর্জন করেছে এটুআই


সহজ ও গতিশীল জীবনযাত্রা সহযোগী প্রযুক্তি উদ্ভাবনের স্বীকৃতি স্বরূপ এটুআই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মাননা ও পুরস্কার অর্জন করেছে। এসব সাফল্যের পেছনে রয়েছে এটুআই- এর দীর্ঘ প্রায় এক যুগের পথ পরিক্রমা ও নতুন নতুন উদ্ভাবন।

রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে দেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নাগরিক সেবা পৌঁছানোর কাজটি শুরু করেছিলো এটুআই। নাগরিকবান্ধব এসব নতুন নতুন উদ্ভাবন এবং তা ব্যবহারের কৌশল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার ক্ষেত্রেও এটুআই সহযোগিতা করেছে।

২০০৯ থেকে এটুআই আইসিটি টুল ব্যবহার করে বিভিন্ন অনলাইন সেবা তৈরিতে সহযোগিতা, মোবাইল বা ওয়েব অ্যাপের মাধ্যমে তা উপস্থাপন, সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো এবং তা ব্যবহার করে দৈনন্দিন জীবন সহজ ও গতিশীল করার মাধ্যমে অনলাইন সেবা সূচকে বাংলাদেশের মূল অগ্রগতিতে অবদান রাখছে।

এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, “এটুআই নাগরিক জীবনকে সহজ করা এবং সরকারি কার্যক্রমকে সহজিকরণ করার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। আর এসব কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মাননা।”

তিনি বলেন, জীবনযাত্রাকে সহজ করা এবং সর্বস্তরের মানুষের কাছে তথ্যপ্রযুক্তি সেবা পৌঁছে দেয়াই এটুআই-এর প্রধান লক্ষ্য। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদের নির্দেশনায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন বাস্তবায়িত ও ইউএনডিপি’র সহায়তায় এটুআই কাজ করে চলেছে।

প্রকল্প পরিচালক বলেন, “প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প ঘোষণার সময় বলেছিলেন, জনগণ যাতে সবার আগে সরকারি সেবা পেতে পারে, সরকারি কার্যক্রম পরিচালনা কেবল অফিস নির্ভর না হয়,জনগণের দোড়গোড়ায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেবা পৌঁছে যায় এবং সহজে পণ্য ও সেবা ডেলিভারি দেয়া যায় সেটা নিশ্চিত করাই ডিজিটাল বাংলাদেশ-এর লক্ষ্য।”

এটুআই দীর্ঘ সময় ধরে শহরের পাশাপাশি প্রান্তিক জনগণের দোরগোড়ায় আধুনিক প্রযুক্তি বান্ধব সেবা পৌঁছানোর জন্য কাজ করছে। আর উদ্ভাবনী সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে যেসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে তার স্বীকৃতি স্বরূপ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেশ কিছু পুরস্কার এবং সম্মাননা অর্জন করেছে।

প্রকল্প পরিচালক বলেন, “কাগজবিহীন অফিস এবং ক্যাশলেস সমাজ” আমাদের একটা সংস্কৃতিতে পরিণত হোক-এটাই আমাদের লক্ষ্য। আমাদের এই কার্যক্রমকে গ্লোবাল ব্র্যান্ড করার পরিকল্পনা রয়েছে। জীবনযাত্রা সহজ করা এবং সরকারের কার্যক্রমকে সহজিকরণ করার কারণেই বাংলাদেশ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মাননা অর্জন করেছে।

উল্লেখ্য, ই-গভর্নেন্সে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য ইউএন ই-গভর্নমেন্ট র‌্যাংকিং (UN e-Government Ranking)-এ বাংলাদেশ ২০১৯ সালের জরিপে ১৯০টি দেশের মধ্যে ১১৯তম স্থান অর্জন করে। ধারাবাহিক র‌্যাংকিং কার্যক্রমে একবার পিছিয়ে গেলেও বাংলাদেশের অবস্থান সবসময় ছিল অগ্রসরমান।

সবচেয়ে ভালো অবস্থানে ছিল ২০১৬ সালে করা র‌্যাংকিং-এ যখন বাংলাদেশ ২৪ ধাপ এগিয়ে ১৪৮ অবস্থান হতে ১২৪-এ পৌঁছায় ২০১২ সালের ১৫০তম অবস্থান থেকে ২০১৮ সালের জরিপে বাংলাদেশ এই অগ্রগতি অর্জন করে। মূলত: তিনটি কম্পোন্যান্টের মধ্যে অনলাইন সার্ভিস ইনডেক্স (Online Service Index)-এ বাংলাদেশ ০.৫১ পয়েন্ট অর্জন করে এস্তোনিয়া, ইউএসএ, কানাডা, অস্ট্রিয়া, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশের সাথে সহ-অবস্থানে রয়েছে।

২০২১ সালে ৩৩৩ জাতীয় হেল্পলাইনের মাধ্যমে দেশব্যাপী সর্বস্তরের জনগণকে টেলিমেডিসিন সেবা প্রদান করার জন্য ‘ভলান্টিয়ার ডক্টরস পুল বিডি’অ্যাপবাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম কর্তৃক ‘বেস্ট ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড’-২০২১’অর্জন করেছে। এছাড়াও, মুক্তপাঠ উদ্যোগটি বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম কর্তৃক ‘বেস্ট ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড-২০২১’অর্জন করেছে।

দেশব্যাপী ই-মিউটেশন উদ্যোগ বাস্তবায়নের স্বীকৃতি হিসেবে ‘স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিকাশ’ ক্যাটাগরিতে ‘ইউনাইটেড নেশনস পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড ২০২০’ অর্জন করেছে। এটুআই এর কারিগরি সহযোগিতায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনায় ও ভূমি সংস্কার বোর্ড এর সহায়তায়ই-মিউটেশন বা ই-নামজারি প্রকল্পটি সারাদেশে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

এটুআই কর্তৃক জনগণের দোরগোড়ায় সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বাস্তবায়িত অসংখ্য উদ্ভাবনী উদ্যোগের মধ্যে বিগত ৬ বছর যথাক্রমে ২০১৪ সালে ডিজিটাল সেন্টার, ২০১৫ সালে জাতীয় তথ্য বাতায়ন, ২০১৬ সালে সেবা পদ্ধতি সহজিকরণ (এসপিএস), পরিবেশ অধিদপ্তরের অনলাইন ছাড়পত্র, শিক্ষক বাতায়ন এবং কৃষকের জানালা, ২০১৭ সালে মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘টেলিমেডিসিন প্রকল্প’, ‘নাগরিক সেবা উদ্ভাবনে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার’ ও ‘ই-নথি’ ২০১৮ সালে ‘মুক্তপাঠ’ ও ‘পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’পুরস্কার অর্জন করেছে।

২০১৯ সালে শিক্ষক বাতায়ন এবং মোবাইল বেইজড এইজ ভেরিফিকেশন বিফোর ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন টু স্টপ চাইল্ড ম্যারেজ প্রজেক্ট এবং ২০২০ সালে গ্রামীণ ই-কমার্স ‘একশপ’এবং National Intelligence for Skills, Employment & Entrepreneurship (NISE) ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) পুরস্কার অর্জন করে।

বাংলাদেশ সরকার এটুআই’কে জাতীয় পর্যায়ে কারিগরি (প্রাতিষ্ঠানিক) ক্যাটাগরিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান এর জন্য জন প্রশাসন পদক ২০১৬ প্রদান করে।

ইন্টারন্যাশনাল ইনোভেশন, ইনোভেশন এ্যান্ড টেকনোলজি এক্সিবিশন (আইটিইএক্স) অ্যাওয়ার্ড ২০১৮ সালে ইনোভেশন ক্যাটাগরিতে ৩টি পুরস্কার লাভ করেছে এটুআই।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড দি ওপেন গ্রুপ অ্যাওয়ার্ডস ফর ইনোভেশন অ্যান্ড এক্সিলেন্স ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ড ও অ্যাওয়ার্ড অব ডিসটিংশন অর্জন করেছে।

দি ওপেন গ্রুপ অ্যাওয়ার্ডস ফর ইনোভেশন অ্যান্ড এক্সিলেন্স ২০১৮ সালে একসেবা প্রেসিডেন্ট অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে।

বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি অ্যাওয়ার্ড ২০১৭, এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি এলায়েন্স (এপিআইসিটিএ) ২০১৭, হেনরী ভিসকার্ডি অ্যাওয়ার্ড ২০১৭, ন্যাশনাল মোবাইল অ্যাপস অ্যাওয়ার্ড ২০১৬ ব্রাক মন্থন ডিজিটাল ইনোভেশন ২০১৬, ইনফরমেশন সোসাইটি ইনোভেশন ফান্ড (আইএসআইএফএশিয়া) অ্যাওয়ার্ড ২০১৩ এবং জিরো প্রজেক্টস অ্যাওয়ার্ড অন ইনক্লুসিভ এডুকেশন ২০১৩ সহ আরো অনেক পুরস্কার অর্জন করেছে।

‘জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩’ বেসিস ন্যাশনাল আইটি পুরষ্কার, এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি অ্যালায়েন্স পুরষ্কার এবং গভইনসাইডার ইনোভেশন পুরস্কার লাভ করেছে।

দেশের প্রথম ও বৃহত্তর অনলাইন বিজনেস প্লাটফর্ম ‘একশপ’ পাঁচটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে। এগুলো হলো; এপিকটা অ্যাওয়ার্ড, এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি অ্যালায়েন্স পুরস্কার, বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি পুরস্কার, আইটেক্স পুরস্কার এবং বাংলাদেশ ব্রান্ড ফোরাম এর বেস্ট প্রসেস ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড।

এছাড়াও আইল্যাব থেকে আইটেক্স পুরস্কার এবং অ্যাপলিটিকাল পুরস্কার, পিএনপিকে, রেম্প পাম্প, ইউজড কুকিং অয়েল, স্মার্ট হোয়াইট ক্যান-আইটেক্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ সিলভার পদক অর্জন করেছে।-বাসস





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar