ad720-90

ওয়েব ব্রাউজার দিয়ে ব্যবহার করুন অরিজিনাল মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ১! উইন্ডোজ এর আদিম যুগে ভ্রমন করতে A-Z সচিত্র মেগাটিউন!


————————–— بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ ————————–—

সুপ্রিয় টেকটিউনস কমিউনিটি, সবাইকে আন্তরিক সালাম এবং শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি কম্পিউটার ব্রাউজারে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ এর ভার্সন ১.০ চালনা সম্পর্কিত আমার আজকের টিউন।

আমরা এখন বর্তমানে আধুনিক যুগে বাস করছি। নিজের যুগের সাথে যুগের তুলনা করলে আধুনিক থেকে অত্যাধুনিক বলতেও বাধা নেই। আধুনিক যুগের অন্যতম চালিকা শক্তি, প্রযুক্তির অন্যতম প্রধান আকর্ষন হলো কম্পিউটার। কম্পিউটার এমন একটা যন্ত্র যার উপর প্রযুক্তির সব কিছুই নির্ভর করে। কম্পিউটার মূলত একটা যন্ত্র হলেও এটি চালনার জন্য প্রয়োজন হয় অপারেটিং সিস্টেম এর। হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের সমন্বয়ে আমাদের কাছে পরিপূর্ণ কম্পিউটার বাহ্যিক জটিল কাজের সহায়ক হিসাবে ধরা দেয়। কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম এর অন্যতম পথিকৃত মাইক্রোসফট গত কয়েক যুগ ধরে কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের কাছে অপারেটিং সিস্টেম যোগান দিয়ে আসছে। তাদের প্রথম দিকের একটি জনপ্রিয় কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম হলো উইন্ডোজ ১.০। এটি প্রায় ৩ বছরের মতো তার অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছিলো। আজকের টিউনটি এই উইন্ডোজ ১.০ কে নিয়েই। তো চলুন তাহলে শুরু করি। যদি কেউ আগে কখনো মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ১.০ চালিয়ে থাকেন (সম্ভাবনা খুবই কম) তাহলে অবশ্যই টিউনের বাকি অংশ দেখে নস্ট্যালজিক হয়ে যাবেন।

উইন্ডোজ ১.০ – উইন্ডোজ ভার্সনের প্রথম দিকের সিড়ি

১৯৮৫ সালে ২০ নভেন্বর মাইক্রোসফট তাদের নতুন অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ১.০ বাজারে উন্মুক্ত করে। IBM PC XT (Model 5160) মডেলের কম্পিউটারে প্রথম উইন্ডোজ ১.০ চালানো হয়। এই অপারেটিং সিস্টেমটি চালনা করার জন্য প্রয়োজন হতো মাত্র ২৫৬ কিলোবাইট র‍্যাম, আর মাত্র কয়েক মেগাবাইট হার্ডডিস্ক। যদিও সেই সময়ে IBM PC XT (Model 5160) কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক ছিলো ১০ মেগাবাইট। যা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট বেশি ছিলো। এই কম্পিউটারের ক্লক স্পিড ছিলো ৪.৭৭ মেগাহার্টজ। তৎকালীন সময়ে মাইক্রোসফট এর এই অসাধারন অপারেটিং সিস্টেমটিই আজ আমরা আমাদের কম্পিউটারে চালিয়ে দেখাবো।

IBM PC XT (Model 5160) মডেলের কম্পিউটার যাতে উইন্ডোজ ১.০ চালানো হয়

আমরা জানি উইন্ডোজ কম্পিউটারে ভার্চুয়াল মেশিন ব্যবহার করে অ্যান্ড্রোয়েড, লিনাক্স ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম, ম্যাকিন্টোস থেকে শুরু করে সবই চালানো যায়। কিন্তু আজ আমরা মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ১.০ ব্যবহার করার জন্য কোন প্রকার ভার্চুয়াল মেশিন ব্যবহার করবো না। আমাদের কম্পিউটারের যেকোন লেটেস্ট ব্রাউজার দিয়েই আমরা মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ১.০ চালাবো। এর জন্য প্রয়োজন হবে একটি লেটেস্ট ব্রাউজার, ইন্টারনেট কানেকশন এবং সর্বোচ্চ ৫ মেগাবাইট ইন্টারনেট ডাটা। কারন অপারেটিং সিস্টেমের সাইজ এর চেয়েও অনেক কম। তো চলুন তাহলে ব্যবহার শুরু করি।

উইন্ডোজ ১.০ – কম্পিউটারে প্রথম ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা

আমরা যেহেতু কম্পিউটারে আমার টিউনটি পড়ছেন তাই ধরে নিচ্ছি আপনাদের কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া আছে এবং সেখানে ৫ মেগাবাইটের চাইতেও বেশি ডাটা আছে। এবার উইন্ডোজ ১.০ ব্যবহারের জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। আপনার কম্পিউটারের ইন্টারনেট স্পিডের উপর ভিত্তি করে উইন্ডোজ ১.০ লোড হতে সময় নিবে। যদি মোটামুটি ইন্টারনেট স্পিড থাকে তাহলে কয়েক সেকেন্ড এর মধ্যে নিচের চিত্রের মতো ব্রাউজারে উইন্ডোজ ১.০ এর স্টার্ট স্ক্রিন দেখতে পাবেন।

উইন্ডোজ ১.০ এর স্টার্ট স্ক্রিন
  • স্টার্ট স্ক্রিন খুব কম সময়ের জন্য স্থায়ী থাকবে। তারপরেই আসবে উইন্ডোজ ১.০ এর সেই কাঙ্খিত ইন্টারফেইস। এখানে আপনি কম্পিউটারের প্রোগ্রামগুলোর জন্য A, B এবং C নামে ৩টি সেকশন দেখতে পাবেন। সেগুলোতে মাউসের ক্লিক করা মাত্রই তাতে অন্তর্ভুক্ত প্রোগ্রামগুলো আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।

  • সেকশন A তে ক্লিক করলে আপনি নিচের প্রোগ্রামগুলো দেখতে পাবেন। তবে বর্তমান কম্পিউটারগুলোর কোন প্রোগ্রাম মেনুতে থাকা সাব মেনু গুলোতে প্রবেশ করার জন্য মেনুতে ক্লিক করলেই সাব মেনু গুলোতে যাওয়া যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে মেনুতে ক্লিক করে মাউসের বাটন চেপে ধরে রেখে সাব মেনুতে যেতে হবে।

  • সেকশন B তে ক্লিক করলে আপনি নিচের প্রোগ্রামগুলো দেখতে পারবেন। সাব মেনুতে প্রবেশ করার জন্য আগের নির্দেশনা অনুসরণ করুন।

উইন্ডোজ ১.০ – বিশেষ প্রোগ্রামগুলো ব্যবহার

উইন্ডোজ ১.০ তো আমরা একবার দেখলাম। এবার চলুন দেখে নেওয়া যাক এতে ব্যবহার উপযোগি কোন কোন প্রোগ্রামগুলো রয়েছে। যদিও এটা আজ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগের কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম। কিন্তু এতে উইন্ডোজ এর সচরাচর অনেক প্রোগ্রাম বর্তমানের মতোই রয়েছে। যেমন ক্যালকুলেটর, ক্যালেন্ডার, পেইন্ট, নোটপ্যাড ইত্যাদি। এই প্রোগ্রামগুলোর তেমন কোন পরিবর্তনই হয়নি গত ৩০ বছরে। আমরা এখন একে একে সেই প্রোগ্রামগুলো ব্যবহার করে দেখবো। তো দৃশ্যমান সবগুলো প্রোগ্রাম আমরা তো ব্যবহার করতে পারবো না। অন্তত আমি সবগুলোই পারি না। তাই নিচের চিত্রের মতো করে ভিউ অপশন থেকে শুধু প্রোগ্রাম নির্বাচন করে দিন।

এবার আপনি নিচের চিত্রের মতো করে আমাদের পরিচিত প্রোগ্রামগুলোকেই দেখতে পাবেন। তবে এমনটা যে করতেই হবে তা না। আমি শুধু প্রোগ্রামগুলোকে সহজে খুঁজে পেতেই এটা করেছি। এবার যে প্রোগ্রামগুলো ব্যবহার করতে চান সেটার উপর ডাবল ক্লিক করলেই ওপেন হয়ে যাবে। লিস্টে যে প্রোগ্রামগুলো দেখছেন সেগুলো কিন্তু বর্তমান অপারেটিং সিস্টেমগুলোতেও আছে। শুধু রান কমান্ডে গিয়ে এই প্রোগ্রামের নাম লিখে এন্টার চেপেই দেখুন।

ক্যালকুলেটরের ব্যবহার

  • যেহেতু কম্পিউটার মানেই হলো গণনা যন্ত্র তাই চলুন ক্যালকলেটর দিয়েই শুরু করি। উপরের চিত্রে প্রোগ্রাম মেনু হতে CALC.EXE প্রোগ্রামটিতে ডাবল ক্লিক করলেই সেটা নিচের চিত্রের মতো ওপেন হয়ে যাবে। এখন মনের মতো কিছু হিসাব কষে নিতে পারেন।

  • বর্তমান অপারেটিং সিস্টেমে যে রকম মাল্টিটাস্কিং আছে এই অপারেটিং সিস্টেমে কিন্তু সেটা নেই। তাই এক সাথে একটা প্রোগ্রামের বেশি রান করা যাবে না। কোন প্রোগ্রাম ব্যবহার শেষে পূর্বের মেনুতে ফেরত যেতে চাইলে আপনাকে নিচের চিত্রের মতো করে আগের প্রোগ্রাম বন্ধ করতে হবে।

ঘড়ি – সময়ানুবর্তিতার ধারক এবং বাহক

  • ঘড়ি ছাড়া দুনিয়া অচল, তাই উইন্ডোজ ১.০ তে রয়েছে সুদৃশ্য ক্লাসিক্যাল ঘড়ি। CLOCK.EXE প্রোগ্রামটিতে চাপলেই দেখতে পাবেন এই সুন্দর ঘড়িটি।

ওয়ার্ডপ্যাড – চলুন কিছু লেখালেখি করি

  • কম্পিউটারে লেখালেখি করার জন্য মাইক্রোসফট এর সব কম্পিউটারেই রয়েছে ওয়ার্ডপ্যাড প্রোগ্রাম। বর্তমান অপারেটিং সিস্টেমগুলোতে রান কমান্ডে গিয়ে WRITE.EXE লিখে এন্টার দিলেই ওয়ার্ডপ্যাড প্রোগ্রাম চালু হয়। উইন্ডোজ ১.০ তে WRITE.EXE প্রোগ্রামে ডাবল ক্লিক করে ব্যবহার করুন কিছুক্ষণ।

  • এতে বর্তমান ওয়ার্ডপ্যাড এর অধিকাংশ অপশনগুলোই আপনি মেনু ট্যাব থেকে খুঁজে পাবেন। হিসাব করে বের করুন তো কোন কোন অপশনগুলো বর্তমান অপারেটিং সিস্টেমে নতুন যোগ করা হয়েছে?

নোটপ্যাড – ছোটখাটো প্রোগ্রামিং টুলস

  • প্রোগ্রাম লেখার জন্য কিংবা সামান্য কিছু নোটস লেখার জন্য কিন্তু নোটপ্যাড এর বিকল্প নেই। এটি ঠিক প্রথম ভার্সন থেকেই উইন্ডোজ এর সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। EXE প্রোগ্রাম চাপলে উইন্ডোজ ১.০ তে এবং বর্তমান ভার্সনগুলোতে রানে গিয়ে এই কমান্ড দিলেই নোটপ্যাড ওপেন হয়ে যাবে। অপশনগুলো কিন্তু সেই আগের মতোই আছে।

উইন্ডোজ পেইন্ট – চলুন আঁকাআঁকি করি কিছুক্ষণ

  • এই জিনিসটা কিন্তু চরম একখান টুলস সেই আদিম যুগ হিসাবে। দেখছেন কতোগুলো অপশন? আমি তো জাপানের পতাকা আকানোর একটা ব্যর্থ চেষ্টা চালালাম অনেক্ষণ ধরে। যাহোক, নিজেরা একবার ট্রাই করে দেখুন।

কন্ট্রোল প্যানেল – বিদ্রুপ করবেন না প্লিজ!

  • এটা হলো উইন্ডোজ ১.০ এর কন্ট্রোল প্যানেল। কী কী কন্ট্রোল করতে পারবেন সেটা নিশ্চয় চিত্র দেখেই বুঝে ফেলেছেন।

  • তবে এটা যে একেবারেই ফেলনা না তা নিচের চিত্র দেখলে স্পষ্ট হবে। এই রকম ফাংশনালিটি কিন্তু বর্তমান অপারেটিং সিস্টেমগুলোতেও আছে।

যদিও বর্তমান সময়ের সাপেক্ষে এই অপারেটিং সিস্টেম নিতান্তই শিশু কিন্তু সেই সময়ের প্রেক্ষিতে উইন্ডোজ ১.০ কিন্তু সেই রকম একখান অপারেটিং সিস্টেম। এই অপারেটিং সিস্টেম হয়তো আপনাদের অতৃপ্ত মনকে তৃপ্ত করতে পারবে না। কিন্তু যখন ভাববেন যে এটি দিয়েই পরবর্তি অপারেটিং সিস্টেমকে ডেভেলপ  করা হয়েছে কিংবা এটা সেই সময়ে প্রযুক্তির সব চাহিদা মিটিয়েছে তখন কিন্তু আপনাদের অনেক ভালো লাগবে। যাহোক, এটা দিয়ে আবার ইন্টারনেট ব্রাউজ করার কথা ভাববেন না যেন। কারনটা কি হতে পারে সেটা আপনাদের কাছে প্রশ্ন। উত্তর জানা থাকলে ঝটপট লিখে ফেলুন টিউমেন্ট সেকশনে।

শেষ কথা

টিউনটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অথবা বুঝতে যদি কোন রকম সমস্যা হয় তাহলে আমাকে টিউমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। কারন আপনাদের যেকোন মতামত আমাকে সংশোধিত হতে এবং আরো ভালো মানের টিউন করতে উৎসাহিত করবে। আর টিউনটিকে মৌলিক মনে হলে এবং নির্বাচিত টিউন হওয়ার উপযুক্ত মনে হলে নির্বাচিত টিউন মনোনয়ন দিতে ভুলে যাবে না যেন। সর্বশেষ যে কথাটি বলবো, আসুন আমরা কপি পেস্ট করা বর্জন করি এবং অপরকেও কপি পেস্ট টিউন করতে নিরুৎসাহিত করি। সবার সর্বাঙ্গিন মঙ্গল কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি। দেখা হবে আগামী টিউনে।

আপনাদের জন্য » সানিম মাহবীর ফাহাদ

➡ ইমেইলে আমার সকল টিউনের আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুনঃ টেকটিউনস » সানিম মাহবীর ফাহাদ 🙄

FB PageProfileTwitterLinkedInGPlusSubscriptionMail

আমার টিউন গুলো ভালো লাগলে অবশ্যই আমার টিউন বেশি বেশি জোসস করুন

আমার টিউন গুলো আপনার ‘টিউন স্ক্রিন’ নিয়মিত পেতে অবশ্যই আমাকে ফলো করুন। আমার টিউন গুলো সবার কাছে ছড়িতে দিতে অবশ্যই আমার টিউন গুলো বিভিন্ন সৌশল মিডিয়াতে বেশি বেশি শেয়ার করুন

আমার টিউন সম্পর্কে আপনার যে কোন মতামত, পরামর্শ ও আলোচনা করতে অবশ্যই আমার টিউনে টিউমেন্ট করুন

আমার সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য ‘টেকটিউনস ম্যাসেঞ্জারে’ আমাকে ম্যাসেজ করুন। আমার সকল টিউন পেতে ভিজিট করুন আমার ‘টিউনার পেইজ’





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar