ad720-90

স্মার্ট কার্ডে বিশুদ্ধ পানি


কার্ড থাকলে মিলবে পানি। ছবি: স্মাট সময়পানির অপর নাম জীবন। কিন্তু রাজধানীবাসীকে এই পানির জন্য সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয়। বিশেষ করে বিশুদ্ধ পানির জন্য। ঢাকাবাসীকে বিশুদ্ধ পানি দিতে চালু হয়েছে স্মার্ট কার্ডে প্রি-পেইড সার্ভিস। নতুন এই সেবায় গ্রাহকের ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে।

স্মার্ট কার্ডে পানি
রাজধানীতে এটিএম (অটোমেটেড টেলার মেশিন) বুথ বসিয়ে প্রি-পেইড কার্ডের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি বিক্রি করছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। প্রতি লিটার পানির জন্য নেওয়া হচ্ছে ৪০ পয়সা। তবে প্রথমে ২০০ টাকার একটি এটিএম কার্ড সংগ্রহ করে চাহিদা অনুযায়ী টাকা রিচার্জ করতে হবে গ্রাহককে। রিচার্জ করা কার্ড যন্ত্রে ঢুকিয়ে নির্ধারিত বোতাম চাপ দিলেই পড়তে থাকবে বিশুদ্ধ পানি। বুথগুলো থেকে সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত পানি নিতে পারবেন প্রি-পেইড কার্ডধারী গ্রাহকেরা।

রাজধানীর নতুন বাজারে ওয়াসার ওয়াটার এটিএম বুথে গিয়ে দেখা যায়, গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি তুলে পাইপের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ট্যাংকের পানি শোধন করে বুথে নেওয়া হচ্ছে। এরপর বুথে স্থাপিত দুটি এটিএম মেশিনে কার্ড ঢুকিয়ে পানি নিচ্ছেন প্রি-পেইড কার্ডধারী গ্রাহকেরা। বুথে কথা হয় নতুন বাজারের বাসিন্দা রাসেল আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এই সুবিধাটি পাওয়ার ফলে আমাদের বিশুদ্ধ পানি নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হচ্ছে না। পানির দাম কম হওয়ার ফলে খরচও কম। আর ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে নেওয়ার কোনো ঝামেলা নেই বললেই চলে।’

পানি নিতে এসেছেন রুমা আক্তার। তিনি বলেন, ‘কার্ডে টাকা থাকলে বোতলে পানি পড়বে। খাওয়ার পানির ক্ষেত্রে আমরা এখন এই বুথের ওপরেই নির্ভর করছি। আমাদের বাসার আশপাশে প্রায় সবাই এখান থেকে পানি নেয়। স্মার্ট কার্ডে টাকা শেষ হয়ে গেলে আবার নতুনভাবে টাকা ভরে নেন বলে জানান তিনি।

নতুন বাজারে পানির বুথে কর্মরত ফারুক আহমেদ বলেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে চালু হয় নতুন বাজারের এটিএম বুথটি। কম খরচে ভালো পানি পাওয়ার সুযোগ থাকার কারণে আস্তে আস্তে এ সেবা জনপ্রিয় হচ্ছে। এখানে কার্ডের মাধ্যমে প্রতি লিটার পানি পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৪০ পয়সায়। এতে করে যেমন পানির অপচয় হচ্ছে না। তেমনি গ্রাহকেরা পাচ্ছেন চাহিদামতো বিশুদ্ধ পানি।

গ্রাহক হতে হলে
স্মার্ট কার্ড নিতে শুরুতে একজন গ্রাহককে ২ কপি ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নিয়ে ওয়াসার বুথে যেতে হবে। ফারুক আহমেদ বলেন, ‘আমাদের সার্ভারে এন্ট্রি করার পর আমরা গ্রাহককে একটি স্মার্ট কার্ড প্রদান করি। একজন গ্রাহককে স্মার্ট কার্ড প্রদান করতে ১০ মিনিটের মতো সময় লাগে।’ তিনি জানান, গ্রাহকেরা প্রথমে ফেরতযোগ্য ২০০ টাকা জামানত দিয়ে এটিএম কার্ডে বিভিন্ন পরিমাণ টাকা পর্যন্ত রিচার্জ করতে পারবেন। কার্ডের টাকা শেষ হলে আর পানি নেওয়া সম্ভব হবে না। তখন আবার কার্ডে টাকা রিচার্জ করে পানি নেওয়া যাবে।

প্রি-পেইডের সুবিধা
প্রি-পেইডে সহজে সেবা পাওয়া যায়। ঝামেলা কম, অনিয়ম-দুর্নীতির সুযোগও কম। সব ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশনের লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ শুরু করেছে। এবং সংশ্লিষ্ট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এ ক্ষেত্রে আগ্রহী দেখাচ্ছে। যদিও সীমিত পরিসরে কিছু প্রতিষ্ঠান প্রি-পেইড সেবা কার্যক্রম শুরু করেছে। রাজধানীতে সীমিত পরিসরে প্রে-পেইড সেবা কার্যক্রম শুরু করেছে ঢাকা ওয়াসা। কার্ড মেশিনে ঢোকানোর পর বোতাম চাপলে পানি বের হবে। কার্ড সরিয়ে ফেললে পানি পড়াও বন্ধ হয়ে যাবে। এতে পানির অপচয় অনেক কম হয়।

লক্ষ্য পুরো ঢাকা
ডেনমার্কের গ্রুন্ডফোজ কোম্পানির সহায়তায় স্থাপিত ফকিরেরপুলের এটিএম বুথটি ২০১৬ সালের ৬ অক্টোবর উদ্বোধন করা হয়। এরপর থেকে প্রি–পেইড কার্ডের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করছে তারা। এ ছাড়া প্রথম পর্যায়ে ওয়াসার পাইলট প্রকল্পের আওতাধীন রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আরও ৫টি ওয়াটার এটিএম বুথ স্থাপন করে তারা। আমেরিকার কোম্পানি ড্রিংকওয়েলের সহায়তায় বুথগুলো রয়েছে মুগদা, মিরপুরের শেওড়াপাড়া, ঢাকা পলিটেকনিক, কদমতলা ও সিদ্ধেশ্বরী বয়েজ অ্যান্ড কলেজ এলাকায়। জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানের অনুদানে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বর্তমানে ৩০টি পানির বুথ চালু রয়েছে। পর্যায়ক্রমে রাজধানীতে বিভিন্ন স্থানে বিশুদ্ধ পানির জন্য এটিএম বুথ চালু করছে ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar