ব্র্যাকের ওয়েবসাইট এখন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীবান্ধব
রোববার ব্র্যাক সেন্টারে
ওয়েবসাইটে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীবান্ধব এই ওয়েবসাইটের
উদ্বোধন করেন এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আব্দুস সালাম।
অনুষ্ঠানে বলা হয়, কম্পিউটার,
ল্যাপটপ, ট্যাব ও ফোন থেকে ব্র্যাকের ওয়েবসাইটে ঢুকে এই বিশেষ সুবিধা কাজে লাগিয়ে দৃষ্টি
প্রতিবন্ধী ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন তথ্য জেনে নিতে পারবেন।
বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহার
করে ওয়েবসাইটের যে কোনো অংশে মাউস রাখা হলে একটি কণ্ঠস্বর ওই অংশটি পড়ে শোনাবে।
এই ‘ননভিজুয়াল ডেস্কটপ অ্যাক্সেস’
বা এনভিডিএ স্ক্রিন রিডার সফটওয়ারটি এখন থেকে ব্র্যাকের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা
যাবে।
ব্র্যাকের ওয়েবসাইটে যোগ করা হয়েছে একটি প্রতিবন্ধী প্রতীকের আইকন।
এতে ক্লিক করলে পাওয়া যায় বেশ কয়েকটি সুবিধা।
যাদের দৃষ্টিশক্তি যথেষ্ট ক্ষীণ ও রঙের তফাৎ বুঝতে সমস্যা রয়েছে
তাদের চোখের উপর চাপ কমাতে ওয়েবসাইটে রাখা হয়েছে ফন্ট ছোট-বড় করা, হাইপারলিংকগুলো চিহ্নিত
করা, ছবি সাদাকালো বা নেগেটিভে রূপান্তর করার সুবিধা।
অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন
(এটুআই) বিভাগের নিরীক্ষণে প্রায় তিনমাস ধরে একটি কারিগরি দল এই ওয়েবসাইট রূপান্তরের
কাজটি করেছে বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে
যুক্ত ছিলেন ব্র্যাক ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইপসার একদল কারিগরি সহযোগী।
ইউএনডিপির মানবাধিকার বিভাগের
প্রধান কারিগরি উপদেষ্টা শারমীলা রাসুল বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার মূল স্লোগান
হচ্ছে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এক সঙ্গে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাওয়া।
“সমাজের প্রতিটি স্তরের
জাতি, ধর্ম, বর্ণ কিংবা সুস্থ্য-প্রতিবন্ধী সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়াই উন্নয়ন।”
অধিকাংশ ক্ষেত্রে অগ্রগতি
হলেও বাংলাদেশে প্রতিবন্ধীদের জন্য সুযোগ-সুবিধাগুলো এখনও অনেক কম উল্লেখ করে তিনি
বলেন, “এখানে গণপরিবহনে, স্বাস্থ্য সেবায় কিংবা
অবকাঠামোতে প্রতিবন্ধীদের অভিগম্যতা এখনও গড়ে উঠেনি।
“তাদের মৌলিক শিক্ষার অধিকারের
জন্য আরও কাজ করা প্রয়োজন। প্রতিবন্ধীদের জন্য এসব কাজ চ্যারিটি থেকে নয় বরং মানবিক
দৃষ্টিকোন থেকে করে যেতে হবে।”
এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক
আব্দুস সালাম বলেন, “ব্র্যাকের মতো বড় এনজিও প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্যবহার উপযোগী করে
ওয়েবসাইট নির্মাণ করার কারণে অন্যরাও এগিয়ে আসবে। এই ক্ষেত্রে ব্র্যাককে অন্যদের সহযোগিতায়
এগিয়ে আসতে হবে।”
সরকারি ও বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ
ওয়েবসাইটগুলোও ধীরে ধীরে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ব্যবহার উপযোগী করা হবে বলেও প্রত্যাশার
কথা জানান তিনি।
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক
আসিফ সালেহ বলেন, “প্রতিবন্ধীদের বিষয়ে নীতি-নির্ধারকদের মানসিকতার পরিবর্তনের দিকে
এখন জোর দেওয়া উচিৎ। সরকারি পর্যায়ে প্রতিবন্ধীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত ইতিবাচক।
অন্যান্য করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এদিকে এগিয়ে আসতে হবে।”
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালকের
সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এটুআই বিভাগের জাতীয়
পরামর্শক ভাস্কর ভট্টাচার্য।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় ৪০ লাখ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার
করতে পারে না।
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব কনসোর্টিয়ামের
(ডব্লিউথ্রিসি) নির্দেশনায় বলা আছে, ওয়েবসাইট অবশ্য প্রতিবন্ধীদের ব্যবহার উপযোগী হতে
হবে।
Comments
So empty here ... leave a comment!