ad720-90

নেটফ্লিক্সে ‘টেনে দেওয়া’ ফিচার: চটেছেন নির্মাতারা


বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৯০টিরও বেশি দেশে নিজেদের চলচ্চিত্র ও টিভি সিরিজ পৌঁছে দিয়েছে নেটফ্লিক্স। এর জনপ্রিয়তাও আকাশচুম্বী। ফলে যখন সমালোচনা হয়, সেটিও কম যায় না।

যোগ হওয়া নতুন ওই ফিচারটির সাহায্যে নেটফ্লিক্স মোবাইল অ্যাপ গ্রাহকরা যে কোনো ভিডিওর গতি বাড়াতে বা কমাতে পারবেন। এ বিষয়টি নিয়েই চটেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতারা। তাদের ভাষ্যে, ‘ফিচারটি অপ্রয়োজনীয় এবং অপমানজনক।’ অ্যান্ড্রয়েড প্ল্যাটফর্মের গ্রাহকদের জন্য আসা ওই ফিচারটি এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। — খবর বিবিসি’র।

ফিচারটি নিয়ে মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারে আপত্তি জানানো চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মধ্যে রয়েছেন ব্র্যাড বার্ড, জুড আপাটো, পিটার রামজি’র মতো নির্দেশকরা। শুধু নির্দেশক নন, অভিনয় শিল্পীরাও আপত্তি তুলেছেন ফিচারটি নিয়ে। এদের মধ্যে রয়েছেন ব্রেকিং ব্যাড টিভি সিরিজের অভিনেতা অ্যারন পল-ও।    

‘মিশন ইমপসিবল: গোস্ট প্রটোকল’ পরিচালক ব্র্যাড বার্ড বলেছেন, “এটি এখনও রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়া চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য আরেকটি বড় আঘাতের মতো।” স্পাইডার-ম্যান: ইনটু দ্য স্পাইডার-ভার্স সহ-পরিচালক পিটার রামজি অবশ্য অসম্ভব রেগে গিয়ে সরল ভাষায় প্রশ্ন করেছেন, “সবকিছুই কি অলস ও রুচিহীনদের জন্য ডিজাইন করতে হবে?” আর নকড আপ চলচ্চিত্রের পরিচালক জুড আপাটো সোজাসাপ্টা রায় দিয়েছেন- ‘এটি অপ্রয়োজনীয় ও অপমানজনক।’

পরিচালকদের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন অভিনয় শিল্পীরাও। এ প্রসঙ্গে ব্রেকিং ব্যাড তারকা অ্যারন পল বলেছেন, “এটি অন্যের শিল্পের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তা ধ্বংস করে দেওয়ার মতো।”

েএমন সব সমালোচনার পর ভিডিও’র গতি বাড়ানো ও কমানোর ওই ফিচারটি নিয়ে নেটফ্লিক্স ভাইস-প্রেসিডেন্ট কিলা রবিসন বলেছেন, “আমরা নেটফ্লিক্সকে উন্নত করতে সাহায্য করবে এরকম নতুন নতুন ফিচার মাঝেমধ্যেই পরীক্ষা করি। সর্বশেষ পরীক্ষাটির কারণে ইতিবাচক ও নেতিবাচক অনেক প্রতিক্রিয়া পেয়েছি। এটা শুধু ‘মোবাইল অনলি টেস্ট’। এর মাধ্যমে শুধু ফোন বা ট্যাবলেটে ভিডিও’র গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন গ্রাহকরা।”

রবিসন আরও যোগ করেছেন, “ফিচারটি কিন্তু অনেক আগে থেকেই ডিভিডি প্লেয়ারে রয়েছে। অসংখ্য গ্রাহক আমাদেরকে ফিচারটি আনতে অনুরোধ করেছেন। এরকম গ্রাহকের মধ্যে অনেকে হয়তো নিজের পছন্দের দৃশ্যটি আবার দেখতে চান, অনেকে আবার ভাষা বোঝার স্বার্থে বিদেশী ভাষার কনটেন্ট ধীরে চালাতে আগ্রহী।”

নির্মাতাদের উদ্বেগের বিষয়টি নজরে এসেছে জানিয়ে কিলা রবিসন বলেছেন, “স্বল্প সময়ের মধ্যেই ফিচারটি সবার হাতে পৌঁছে দেওয়ার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই। যখনই ফিচারটি আসুক না কেন, সেটা প্রাপ্ত প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে আনা হবে।”

বিবিসি উল্লেখ করেছে, ফিচারটির সুবিধা নিয়ে অনেকের ‘স্পিড-ওয়াচিং’ অভ্যাস গড়ে উঠতে পারে। বর্তমানে অনেকেই এভাবে অনলাইন কনটেন্ট দেখে থাকেন। এ কারণে অনেক সেবাতেই এ ফিচারটি রয়েছে। গুগল ক্রোমের ‘এক্সটেনশন’ ব্যবহার করে চাইলেই নেটফ্লিক্স ভিডিও’র গতি বাড়ানো সম্ভব। ইউটিউব ও অ্যাপল পডকাস্টেও এ ধরনের ফিচার আছে।  

মজার বিষয় হলো, ‘স্পিড-ওয়াচিং’-এ অভ্যস্ত এমন দর্শকদের জন্য অনলাইন জগতে ‘কার্যকারিতা বিশেষজ্ঞ’ পর্যন্ত রয়েছেন। ‘কোন ধরনের কনটেন্ট ঠিক কতোটা গতিতে দেখলে সময় বাঁচবে কিন্তু অভিজ্ঞতা মাটি হবে না’ সে বিষয়ে পরামর্শ দেন তারা। এরকমই এক ওয়েবসাইটের নাম ‘এফিশিয়েন্সি ইজ এভরিথিং’। সাইটটির নির্মাতা মাইকেল কার্ক সেখানে লিখে রেখেছেন, “আরও কৌতুক, আরও হাসি, আরও নাটক, আরও সাসপেন্স – একই সময়ে।” 

কার্ক-এর ভাষ্যে, “একই কৌতুক, একই প্লট, গতি শুধু ১০ শতাংশ বেশি – কোনো পরিবর্তন চোখেই পড়বে না।”





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar