ad720-90

জিপির ১০০ কোটি টাকার প্রস্তাব প্রত্যাখান বিটিআরসির


লাস্টনিউজবিডি, ১৯ ফেব্রুয়ারি: মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন ১০০ কোটি টাকা নিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) গিয়েছিল। কিন্তু বিটিআরসি সেই টাকা নেয়নি প্রত্যাখান করেছে। তবে বিটিআরসি বলছে, আদালতের নির্দেশনার বাইরে তারা কিছু করবে না।

আজ বুধবার বিকালে
গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ চেক নিয়ে বিটিআরসি’র কার্যালয়ে যায় বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।

গ্রামীণফোন
বলেছে, তারা নিরীক্ষা নিয়ে আলোচনা শুরুর জন্য এ টাকা দিতে চেয়েছিল। এর আগে অর্থমন্ত্রী
আ হ ম মুস্তফা কামালের নেতৃত্বে একটি বৈঠকে আলোচনা শুরুর জন্য ২০০ কোটি টাকা জমা দেওয়ার
কথা বলা হয়েছিল। গ্রামীণফোন বলছে, সেই আলোচনাটাই তারা চায়।

এই
১০০ কোটি টাকা আদালতের প্রক্রিয়ার বাইরে বলে উল্লেখ করে গ্রামীণফোন আরও বলেছে, আদালত
তাদের যে দুই হাজার কোটি টাকা জমা দিতে বলেছে, সেটা সরঞ্জাম আমদানি ও প্যাকেজের নিষেধাজ্ঞা
কাটাতে। সে বিষয়ে তারা রিভিউ আবেদন করেছে। সেখানে এ বিষয়ে আদালতের রায়ের পর তারা পরবর্তী
সিদ্ধান্ত নেবে।

এদিকে
বিটিআরসির জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) মো. জাকির হোসেন খান এ বিষয়ে একটি বিবৃতি
দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘যেহেতু গ্রামীণফোনের নিরীক্ষা–সংশ্লিষ্ট বিষয়টি
নিয়ে আদালতের একটি নির্দেশনা রয়েছে, সে ক্ষেত্রে বিটিআরসি ওই নির্দেশনার বাইরে কোনো
পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে না। কমিশন নির্দেশনা পালনে সচেষ্ট আছে।’

আজ
বুধবার গ্রামীণফোন ১০০ কোটি টাকার পে-অর্ডার নিয়ে বিটিআরসিতে যায়। এ বিষয়ে তারা বিকেলে
রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানায়। এতে গ্রামীণফোনের
পরিচালক ও হেড অব রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত বলেন, ‘আমরা টাকা নিয়ে গেলে বিটিআরসি
নিতে অপারগতা জানায়। তারা বলেছে, এখনকার পরিস্থিতিতে তারা টাকা নিতে পারে না।’

নিরীক্ষা
দাবি হিসেবে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা পাওনা আদায়ের জন্য গ্রামীণফোনের সরঞ্জাম আমদানি
ও প্যাকেজ অনুমোদনে অনাপত্তিপত্র দেওয়া বন্ধ রেখেছে বিটিআরসি। এ নিয়ে গ্রামীণফোন আদালতে
যায়। গত ২৪ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট গ্রামীণফোনকে নিষেধাজ্ঞা কাটাতে দুই হাজার কোটি টাকা
জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। এ জন্য তিন মাস সময় পেয়েছিল গ্রামীণফোন, যা ২৩ ফেব্রুয়ারি
শেষ হওয়ার কথা।

গ্রামীণফোন
ও রবির কাছ থেকে পাওনা আদায়ের জন্য বিটিআরসির বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্যে অর্থমন্ত্রী
আ হ ম মুস্তফা কামাল সমঝোতার একটি উদ্যোগ নিয়েছিলেন। গত বছরের ৩ অক্টোবরের একটি বৈঠকের
কার্যবিবরণীতে দেখা যায়, সভায় পাঁচটি প্রস্তাব পেশ করা হয়, যা হলো ১. দুই পক্ষ একটি
কমিটি গঠন করে পাওনা পরীক্ষা অথবা পরীক্ষার পদ্ধতি বের করবে। ২. বিটিআরসি লাইসেন্স
বাতিলের কারণ দর্শানোর নোটিশ ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে। অন্যদিকে অপারেটররা মামলা
প্রত্যাহারের পদক্ষেপ নেবে। ৩. অর্থমন্ত্রী, টেলিযোগাযোগমন্ত্রী, এনবিআর ও বিটিআরসির
চেয়ারম্যান কমিটির কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে রাখবেন। ৪. কমিটি গঠন ও কমিটির কাজ শুরুর
আগের সাত দিনের মধ্যে গ্রামীণফোন ১০০ কোটি ও পরের এক মাসের মধ্যে ১০০ কোটি টাকা বিটিআরসিকে
দেবে। রবি দেবে দুই দফায় ৫০ কোটি টাকা। ৫. এসব প্রস্তাব দুই অপারেটর তাদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের
কাছে পর্যালোচনা ও অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করবে।

এরপর
প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের উপস্থিতিতেও একটি বৈঠক হয়েছিল।
এরই মধ্যে বিটিআরসিকে প্রশাসক বসানোর অনুমোদন দেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। প্রশাসক
ঠেকাতে গ্রামীণফোন ও রবি যায় আদালতে। এতে আলোচনা আর এগোয়নি। মন্ত্রীর বৈঠকের প্রস্তাব
অনুযায়ী বিটিআরসিও কমিটি গঠন করেনি।

অবশ্য ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার এর আগে বলেছেন, ওই বৈঠকের প্রস্তাব অনুযায়ী গ্রামীণফোন টাকা জমা দেয়নি।

আরও পড়ুন: টাওয়ারের রেডিয়েশন নিয়ে আতঙ্ক নয়: আমিনুল হাসান

গ্রামীণফোনের
হোসেন সাদাত বলেন, ‘বিভিন্ন সময় বলা হয়েছে কিছু টাকা জমা দিতে। আমরা আলোচনা আবার এগিয়ে
নিতে ১০০ কোটি টাকা নিয়ে গিয়েছিলাম।’

তিনি
বলেন, ‘নিরীক্ষার বিষয়টি আদালতে সুরাহা হতে অনেক সময় লাগবে। আমরা চাই আলোচনার মাধ্যমে
দ্রুত সমাধান হোক।’

হোসেন
সাদাত বলেন, আদালতের দুই হাজার কোটি টাকা আর এই ১০০ কোটি টাকার বিষয়টি পুরোপুরি ভিন্ন।
একটির সঙ্গে অন্যটি মেলানো যাবে না।

লাস্টনিউজবিডি/এস
এম সবুজ

সর্বশেষ সংবাদ



সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar