ad720-90

করোনাভাইরাস: অ্যাপল-গুগলের প্রযুক্তিতে যুক্তরাজ্যের “না”


কনট্যাক্ট-ট্রেসিংয়ের জন্য অ্যাপল-গুগলের প্রস্তাবিত মডেলের বদলে অন্য মডেল ব্যবহার করার কথা জানিয়েছে এনএইচএস। তাদের এই মডেলের গোপনতা এবং কার্যকরিতা নিয়ে শঙ্কা থাকলেও অ্যাপল-গুগলের মডেল ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।

এনএইচএস জানিয়েছে, আইফোনে সফটওয়্যারটি যাতে “যথেষ্ট ভালো” কাজ করে সেজন্য তাদের কাছে একটি বিকল্প উপায় রয়েছে। এর জন্য অ্যাপটি সক্রিয় রাখা বা পর্দা চালু রাখার দরকার পরবে না।

এই সীমাবদ্ধতার কারণে অন্যান্য দেশে সমস্যায় পড়েছে একই ধাঁচের অ্যাপগুলো।

সমাধানের বিষয়ে এনএইচএস ডিজিটাল উদ্ভাবনী বিভাগের (এনএইচএসএক্স) এক মুখপাত্র বলেন, “জনগণের স্বাস্থ্যগত চাহিদা মেটাতে এবং করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংস্পর্শ শনাক্তকরণে অ্যাপটি যাতে যথেষ্ট ভালো কাজ করে সেজন্য প্রকৌশলীরা অ্যাপটির মূল কিছু চ্যালেঞ্জ দূর করেছেন, অ্যাপটি যখন ব্যাকগ্রাউন্ডে চলবে এবং যাতে খুব বেশি ব্যাটারি খরচ না করে এমন বিষয়গুলোও বিবেচনায় এসেছে।”

কনট্র্যাক্ট ট্রেসিং অ্যাপগুলোর কাজ হলো, গ্রাহক যদি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন তাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সতর্ক করা। গ্রাহক সম্প্রতি করোনাভাইরাস আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন কিনা তার ওপর ভিত্তি করে এই সিদ্ধান্ত নেবে অ্যাপটি। বর্তমানে অনেক দেশেই চালু করা হয়েছে এ ধরনের অ্যাপ।

দুই জন ব্যক্তি যখন প্রতিবার একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে আসেন, তারা কতো সময় কাছাকাছি থাকছেন এই ডেটাগুলো বিশ্লেষণ করে কনট্যাক্ট-ট্রেসিং অ্যাপ। এর মধ্যে কোনো ব্যক্তি যদি নিজেকে আক্রান্ত হিসেবে অ্যাপে ইনপুট দিয়ে থাকেন, তবে অন্যদেরকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সতর্ক করে অ্যাপটি।

সাধারণত কনট্যাক্ট-ট্রেসিংয়ের এই কাজে স্মার্টফোনের ব্লুটুথ প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হয়। অন্যান্য দেশের মতো যুক্তরাজ্যও কনট্যাক্ট-ট্রেসিংয়ের জন্য ব্লুটুথ প্রযুক্তির ব্যবহার করছে।

সতর্কবার্তা পাঠানোর ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির পরিচয় গোপন থাকবে বলে জানিয়েছে এনএইচএসএক্স। যাতে সংস্পর্শে আশা অন্য ব্যক্তি জানতে না পারেন তিনি কার মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন।

আক্রান্ত ব্যক্তির পরিচয় গোপন রাখতে “কেন্দ্রিভূত মডেল” ব্যবহার করেছে এনএইচএসএক্স। কোন ফোনে সতর্কবার্তা পাঠাতে হবে, এই মডেলে সেই সিদ্ধান্তটি দেওয়া হয় কম্পিউটার সার্ভার থেকে।

অন্যদিকে “বিকেন্দ্রিভূত মডেলের” প্রস্তাব করেছে অ্যাপল ও গুগল। এই মডেলে ডেটা প্রসেসিংয়ের কাজগুলো করা হয় গ্রাহকের স্মার্টফোনে।

প্রতিষ্ঠান দু’টির বিশ্বাস এই মডেলটির গোপনতা আরও বেশি কার্যকরি। এই মডেলের কারণে কর্তৃপক্ষ বা হ্যাকার কম্পিউটার সার্ভারের তথ্য ব্যবহার করে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পারবে না বলে দাবি করেছে তারা।

অপরদিকে এনএইচএসএক্স মনে করছে কেন্দ্রিভূত ব্যবস্থা কোভিড-১৯ এর বিস্তার বিষয়ে আরও ভালো ধারণা দিতে পারবে। পাশাপাশি অ্যাপটি কতোটা বিস্তৃত হচ্ছে তাও নজরে রাখা যাবে।

এনএইচএসএক্স-এর উপদেষ্টা অধ্যাপক ক্রিস্টোফে ফ্রেজার বলেন, “এখানে একটি সুবিধা হলো, ব্যবস্থাটি নীরিক্ষণ করা সহজ এবং বৈজ্ঞানিক প্রমাণ কেন্দ্রিভূত হওয়ায় এটির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াও সহজ।”

“এখানে মূল লক্ষ্য যারা আক্রান্ত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে তাদেরকে নোটিফিকেশন পাঠানো, কম ঝুঁকিতে রয়েছেন তাদেরকে নোটিফিকেশন পাঠানো নয়। সম্ভবত কেন্দ্রিভূত ব্যবস্থায় এই কাজটি করা সহজ।”

সুইজারল্যান্ড, এস্তোনিয়া এবং অস্ট্রিয়া রেড ক্রসের এই অ্যাপগুলোর ক্ষেত্রে বিকেন্দ্রিভূত ব্যবস্থা ব্যবহার করেছে। সেখানো ভিন্ন পথে হাঁটছে যুক্তরাজ্য।

জার্মানি প্রাথমিকভাবে এনএইচএসএক্স-এর মডেলের পক্ষে থাকলেও রোববার হঠাৎ মত বদলে “বিকেন্দ্রিভূত মডেলের” পক্ষ নিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি।

কনট্যাক্ট-ট্রেসিং অ্যাপগুলোর জন্য এ সপ্তাহেই এপিআই উন্মুক্ত করবে অ্যাপল ও গুগল। গুগল-অ্যাপলের মডেলে কোনো বিপত্তি ছাড়াই ব্যাকগ্রাউন্ডে ব্লুটুথ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।

প্রতিটি স্মার্টফোনই ব্লুটুথ সংযোগের তথ্য জমা রাখে। পরে আবার সংযোগ পাওয়ার বেলায় ওই তথ্য ব্যবহার করে ফোনগুলো। অ্যাপল ও গুগলের এই সমঝোতার ফলে স্মার্টফোনগুলো সবসময় নজর রাখবে তারা কোন কোন ফোনের ব্লুটুথের কাছাকাছি দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করেছেন যা করোনাভাইরাস সংক্রমণের জন্য যথেষ্ট।

এনএইচএসএক্স-এর নিজস্ব প্রচেষ্টারও বিরোধিতা করছে না অ্যাপল-গুগল। তবে, প্রতিষ্ঠান দু’টি মনে করছে তাদের সমাধানে ব্যাটারি খরচ কম হবে।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar