ad720-90

অ্যাপলের বিরুদ্ধে ফের আদালতে ফোর্টনাইট নির্মাতা


অ্যাপলের সঙ্গে এপিক গেইমসের বিবাদের সূত্রপাত অ্যাপ স্টোরের ‘ইন-অ্যাপ পারচেস’ নীতিমালা নিয়ে। নিয়ম অনুসারে, অ্যাপলকে ইন-অ্যাপ পারচেসসহ অ্যাপ স্টোরের মাধ্যমে যে কোনো বিক্রির ৩০ শতাংশ দিয়ে দিতে হয় অ্যাপ ডেভেলপারদের। এপিক বলছে, এই খরচ অন্যায্য।

বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে নিজেদের ডেভেলপার কর্মসূচী থেকে এপিক গেইমসকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে অ্যাপল। এতে করে অ্যাপল প্ল্যাটফর্মে অন্য কোনো গেইম বা অ্যাপ আর দিতে পারবে না এপিক গেইমস।

অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরের মতো গুগলের প্লে স্টোরে-ও ইন-অ্যাপ পারচেসের ব্যাপারে নিয়ম রয়েছে। দুটি প্রতিষ্ঠানই সমান খরচ নিয়ে থাকে ডেভেলপারদের কাছ থেকে।

ফোর্টনাইটের বেলায় এ খরচ বাঁচাতে সরাসরি নিজেদের সাইট থেকে গেইম সংশ্লিষ্ট সুবিধা কেনার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল এপিক গেইমস। কিন্তু অ্যাপল ও গুগলের তা ভালো লাগেনি। নিজ নিজ প্ল্যাটফর্ম থেকে ফোর্টনাইটকে সরিয়ে দিয়েছে প্রতিষ্ঠান দুটি।

ফলে আগে থেকে ডাউনলোড করে রাখা গেইমাররা গেইমটি খেলার সুযোগ পেলেও, নতুন করে অন্য কেউ গেইমটি ডাউনলোড করতে পারছেন না বা নতুন কোনো আপডেটও পাচ্ছেন না।

ফোর্টনাইটকে দুই সপ্তাহের সময় বেঁধে দিয়েছে অ্যাপল। আইওএস প্ল্যাটফর্মে গেইমটিকে ফিরিয়ে আনতে হলে দুই সপ্তাহের মধ্যে বাকি থাকা ইন-অ্যাপ খরচ ফিরিয়ে দিতে হবে।

নিজেদের সর্বশেষ আইনি নথিতে এপিক বলেছে, অ্যাপলের ডেভেলপার কর্মসূচী থেকে পুরোপুরি সরিয়ে দিলে “অপূরণীয় ক্ষতি” হবে তাদের।

অ্যাপলের নিষেধাজ্ঞার কবলে এপিক গেইমসের জনপ্রিয় গ্রাফিক্স টুল ‘আনরিয়েল ইঞ্জিন’ও পড়বে। চলচ্চিত্র, গেইমস ও ভার্চুয়াল রিয়েলিটির অনেক তৃতীয় পক্ষীয় ডেভেলপার-ও বিপাকে পড়বেন, বিকল্প খুঁজে নিতে হবে তাদের।

অ্যাপল অবশ্য নাছোড়বান্দা। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তাদের নিয়ম অ্যাপ স্টোরের প্রতিটি অ্যাপের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, নিয়ম ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়ে এপিক নিজেই সমস্যায় পড়েছে।

“আমরা এপিকের জন্য ব্যতিক্রম কিছু করব না, কারণ আমাদের মনে হয় না তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থকে গ্রাহকদের সুরক্ষার চেয়েও নঅগ্রাধিকার দেওয়া ঠিক হবে।” – বলেছে অ্যাপল।

এপিক অভিযোগ তুলেছে, নিজ অপারেটিং সিস্টেমের শত কোটি গ্রাহকের উপর অ্যাপল “পুরোপুরি একচেটিয়া” ক্ষমতা চালাচ্ছে। জবাবে অ্যাপল বলছে, অ্যাপ স্টোরের নীতিমালা থেকে এপিক নিজেও লাভবান হয়েছে, নিজেদেরকে “কয়েকশ’ কোটি ডলারের” ব্যবসায় পরিণত করতে পেরেছে।

অ্যাপ স্টোর নীতিমালা প্রশ্ন অ্যাপলের বিপক্ষে দাঁড়ানো প্রথম ডেভেলপার নয় এপিক গেইমস। এর আগে জুনে ইমেইল অ্যাপ ‘হেই’ প্রশ্ন তুলেছিল অ্যাপ স্টোরের ইন অ্যাপ পারচেস নীতি নিয়ে।

সে সময় ডেভেলপার ডেভিড হাইনমেয়ার হ্যানসন বলেছিলেন, “আমরা যদি অ্যাপলের নিয়ম পছন্দ না করি – তাহলে হয় তাদের ৩০ শতাংশ দিতে হবে, না-হয় প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে কী-ই বা করতে পারি? কার কাছে গিয়ে দাঁড়াতে পারি?”

“আপনি নতুন সফটওয়্যার নিয়ে এলেন, কিন্তু আইফোনে নেই, তাহলে তো আপনি অদৃশ্য।” – যোগ করেছিলেন তিনি।

অ্যাপ স্টোরের শর্তাবলীর মাধ্যমে প্রতিযোগিতা নিয়মের লঙ্ঘন হচ্ছে কি না তা জানতে তদন্ত করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যামাজন, ফেইসবুক ও গুগল প্রধানের পাশাপাশি কংগ্রেস শুনানিতে অংশ নিতে ও ‘হাউস জুডিশিয়ারি অ্যান্টিট্রাস্ট সাবকমিটির’ সামনে স্বাক্ষ্য দিতে হাজির হয়েছিলেন অ্যাপল প্রধান টিম কুক।

সেখানে সবার বিরুদ্ধেই বাজারে নেতৃস্থানীয় অবস্থানের সুযোগ নেওয়ার অভিযোগ এসেছিল।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar