ad720-90

পরীক্ষামূলক ফ্লাইট সম্পন্ন করলো প্রোটোটাইপ ‘এয়ারকার’


স্লোভাকিয়ার দুটি বিমানবন্দর, নিত্রা আর ব্রাতিসলাভার মধ্যে উড়ে গিয়েছে এক হাইব্রিড বাহন, বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মিলিয়ে যার নাম ‘এয়ারকার’। বিএমডাব্লিউ ইঞ্জিন আর গাড়িতে  ব্যবহৃত প্রচলিত জ্বালানী তেল এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এয়ারকারের নির্মাতা অধ্যাপক স্টেফান ক্লেইন বলছেন, এটি আট হাজার দু’শ ফিট উচ্চতায় মোটামুটি এক হাজার কিলোমিটার উড়তে পারে। এরই মধ্যে প্রায় ৪০ ঘণ্টার ফ্লাইট সম্পন্ন করেছে এটি।

এমন সব চমকপ্রদ তথ্যের পাশাপাশি চোখ কপালে তুলে দেওয়ার মতো তথ্য হলো, গাড়ি থেকে উড়ুক্কু যানে এর রূপান্তরে লাগে মাত্রই সোয়া দুই মিনিট!

‘বড়ই আনন্দময়’

এটি যখন গাড়ির চেহারায় থাকে তখন এর সরু ডানা দুটি ভাঁজ হয়ে গাড়ির পাশে জুড়ে যায়। আমন্ত্রিত সংবাদিকরা দেখলেন অধ্যাপক ক্লেইন রানওয়ে থেকে ‘গাড়ি চালিয়েই’ বের হয়ে মিশে গেলেন নগরের কোলাহলে।

গোটা অভিজ্ঞতাকে তিনি বর্ণনা করলেন “স্বাভাবিক” এবং “বড়ই আনন্দময়” হিসেবে। সোমরার ভোরের এই ফ্লাইটে তার গতি উঠেছিল ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার।

মোট দু’শ কেজি ভরের দুইজন যাত্রী বহন করতে পারে এটি। তবে, সম্প্রতি প্রদর্শিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ড্রোন-ট্যাক্সিগুলোর মতো এটি কপ্টারের কৌশলে উল্লম্বভাবে ওঠানামা করতে পারে না, এর জন্য রানওয়ের দরকার হয়।

উড়ুক্কু গাড়ির জন্য বিশাল বাজার অপেক্ষা করছে বলেই অনুমান রয়েছে। ভবিষ্যতের জীবনধারায় একে ইতোমধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে দেখা হয়। বিশ্লেষক ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মর্গান স্ট্যানলি’র অনুমান ২০৪০ সালের মধ্যে এটি দেড় লাখ কোটি ডলারের বজারে পরিণত হবে।  

ছবি: ক্লেইনভিশন

ছবি: ক্লেইনভিশন

এয়ারকারের পরীক্ষামূলক ফ্লাইটের পরদিনই এক ইভেন্টে হিউন্দাই মোটর্স ইউরোপের প্রধান নির্বাহী মাইকেল কোল এই ধারণাকে “ভবিষ্যতের অংশ” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

সড়ক পথে যাতায়াতে ঝক্কিঝামেলার সম্ভাব্য সমাধান হিসেবে একে বিবেচনা করা হচ্ছে।

বিশাল বাজার

এয়ারকারের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ক্লেইনভিশন জানিয়েছে প্রোটোটাইপটি তৈরিতে বিনিয়োগ লেগেছে প্রায় ২০ লাখ ইউরো।

প্রতিষ্ঠানটির উপদেষ্টা অ্যান্টন রাজাক বলেন, বৈশ্বিক এয়ারলাইন বা ট্যাক্সি বিক্রির যদি একটি ক্ষুদ্র ভগ্নাংশও যদি তারা ধরতে পারেন সেটি প্রতিষ্ঠানটির জন্য হয়ে উঠবে অসম্ভব লাভজনক।

“কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকেই ৪০ হাজারের মতো এয়ারক্রাফটের অর্ডার আছে।” – তিনি বলেন।

“এবং আমরা যদি এর কেবল পাঁচ শতাংশও উড়ুক্কু গাড়ির বাজারে আনতে পারি, সেটিই আমাদের জন্য বিশাল বাজার।”

“রিয়েলি কুল!”

ইউনিভার্সিটি অফ দি ওয়েস্ট অফ ইংল্যান্ডের অ্যাভিওনিক্স এবং এয়ারক্র্যাফট বিভাগের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. স্টিফেন রাইট এয়ারকারকে “বুগাটি ভেইরন এবং সেসনা ১৭২ এর লাভ চাইল্ড” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

অন্যান্য উড়ুক্কুযানের তুলনায় আওয়াজ বা জ্বালানী খরচের প্রশ্নে গাড়িটি পাশ করে যাবে বলেই তিনি মনে করেন।

“আমাকে স্বীকার করতে হবে যে এটি সত্যিই দুর্দান্ত দেখাচ্ছে – তবে সার্টিফিকেশন বিষয়ে আমার কাছে একশ’ প্রশ্ন রয়েছে” – ড. রাইট বলেন।

“যে কেউ প্লেন তৈরি করতে পারে। কিন্তু শর্ত হলো, এটি উড়বে, উড়বে এবং উড়তেই থাকবে মিলিয়ন ঘণ্টার জন্য, এতে মানুষ থাকবে এবং একটিও দুর্ঘটনা ঘটবে না সেটি নিশ্চিত করা।”

“আমি সেই কাগজের টুকরাটি দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছি যেখানে বলা থাকবে যে, এটি ওড়া এবং বিক্রি করার জন্য নিরাপদ।”





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar