ad720-90

অ্যামাজন অধ্যায়ের পর কী রয়েছে বেজোসের জন্য?


বেজোস অবশ্য একেবারে অ্যামাজন ছাড়ছেন না। প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে সরে দাঁড়ালেও অ্যামাজন বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকবেন তিনি। অ্যামাজনের সিংহভাগ শেয়ারের মালিকানাও তার। অ্যামাজনের কিছু কর্মীর ধারণা, বেজোস প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের বেলায় নিয়ন্ত্রণ ছাড়বেন না।

প্রতিষ্ঠানের ১৩ লাখ কর্মীর উদ্দেশ্যে কয়েক মাস আগে ৫৭ বছর বয়সী বেজোস বলেছেন, “আমি কার্যালয়ে এখনও যতোই নেচে বেড়াই না কেন, পট পরিবর্তনের বিষয়ে আমি আগ্রহী।” তিনি আরও বলেছেন, “আমার এখনও কর্মশক্তি রয়েছে, এবং এটি অবসরের বিষয় নয়। আমি আমার শক্তি ও মনোযোগ নতুন পণ্য ও প্রাথমিক উদ্যোগে কাজে লাগাতে চাই।”

এ রকম উদ্যোগের মধ্যে প্রথমেই রয়েছে ‘ব্লু অরিজিন’। বেজোস নিজের এই মহাকাশভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের স্বপ্ন দেখেছেন অনেক আগেই, একেবারে ছাত্র অবস্থাতেই। আরও পরিষ্কার করে বললে, পৃথিবীর বাইরে কিছু করার লক্ষ্য ছিল বেজোসের। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে ফিরে যেতে হবে ১৯৮২ সালে। ১৮ বছর বয়সী বেজোস তখন নিজ হাই স্কুল ক্লাস থেকে ভ্যালেডিকটোরিয়ান খেতাব পেয়েছেন। সংবাদমাধ্যম মায়ামি হেরাল্ড গিয়েছিল তার সাক্ষাৎকার নিতে। বেজোস সে সময় বলেছিলেন, “কক্ষপথে থাকবেন এমন ২০ বা ৩০ লাখ মানুষের জন্য নীল মহাকাশ হোটেল, বিনোদন পার্ক এবং কলোনি গড়তে” চান তিনি।

“গোটা ধারণাটিই আসলে বিশ্বকে সংরক্ষণ করা।” – বলেছিলেন বেজোস। “মূল লক্ষ্যটাই হচ্ছে মানুষকে নিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা। যাতে বিশ্ব একটি পার্ক এর মতো হয়ে যায়।”

জুলাইয়ের ২০ তারিখ বেজোস আপন ভাই মার্ককে নিয়ে রওনা হবেন মহাকাশের উদ্দেশ্যে। ছোটবেলার স্বপ্ন পূরণ করতে চলেছেন তিনি। ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লিখেছিলেন বেজোস, “পাঁচ বছর বয়স থেকেই আমি মহাকাশে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি।”

আগামীতে বেজোস ওয়াশিংটন পোস্টের পেছনেও বেশি সময় দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৩ সালে ২৫ কোটি ডলারের বিনিময়ে প্রভাবশালী মার্কিন দৈনিকটি কিনেছিলেন তিনি। কেনার পর এটিকে ডিজিটাল মাধ্যমে নিয়ে আসা এবং কিন্ডলের মতো ডিভাইসে অগ্রাধিকার দেওয়ার পেছনে কাজ করেছেন তিনি।

সে সময় বেজোস বলেছিলেন, “আমি সংবাদপত্রের ব্যবসা সম্পর্কে কিছু জানি না.. কিন্তু ইন্টারনেট সম্পর্কে আমার কিছুটা ধারণা রয়েছে।”

অনুমান করা যায়, ১৯৯ বিলয়ন ডলারের মালিক বেজোস সম্ভবত দাতব্য কাজেও মন দেবেন। তবে, বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ ধনীর মধ্যে ব্যতিক্রমই বলা চলে বেজোসকে। কারণ, এদের মধ্যে শুধু তিনিই ‘গিভিং প্লেজ’ এর আওতায় দান করেননি। গিভিং প্লেজ হচ্ছে বিল গেটস এবং ওয়ারেন বাফেটের দাতব্য উদ্যোগ যেখানে নিজ সম্পদের অন্তত অর্ধেক দান করছেন এই দু’জনসহ বিশ্বের শীর্ষ ধনীরা। এই অর্থের ব্যবহার হয় জনহিতকর কাজে। এর আগে ২০১৮ সালে স্বল্প আয়ের পরিবারের শিশুদের আবাসন ও উন্নত শিক্ষায় সহায়তার লক্ষ্যে দুইশ’ কোটি ডলার ‘বেজোস ডে ওয়ান ফান্ড’ এ দান করেছিলেন তিনি, যেটি তার বর্তমান সম্পদের স্রেফ শতকরা এক ভাগের সামান্য বেশি।

এ ছাড়াও ‘বেজোস আর্থ ফান্ড’ নামে তহবিল গড়ে তুলেছেন তিনি। এর পুরোটাই জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কর্মরত বিজ্ঞানী, দাতব্য সংস্থা ও কর্মীদের সমর্থন জানানোর জন্য এক হাজার কোটি ডলারের একটি উদ্যোগ।

“জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।” – এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন বেজোস। ওই সময়েই বিশ্বকে বাঁচাতে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি।

“এই বিশ্বই একমাত্র জিনিস যেটি আমদের সবার জন্যই আছে। আসুন একে আমরা সবাই মিলে রক্ষা করি।”





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar