ad720-90

ভিডিও পোস্ট ঠেকাতে পুলিশের অস্ত্র ‘কপিরাইট’ 


ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ওকল্যান্ডে। ‘অ্যান্টি পুলিশ-টেরর প্রজেক্ট’ (এপিটিপি) নামের এক দলের সদস্যরা জড়ো হয়েছিলেন এক আদালতের বাইরে। ওই আদালতে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কৃষ্ণাঙ্গ এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে বিচার পূর্ব শুনানি চলছিল। 

প্রতিবাদকারীরা ওই পুলিশ কর্মকর্তার ভিডিও ধারণের সময় তিনি নিজের মোবাইল ফোনে মার্কিন পপ সঙ্গীত শিল্পী টেইলর সুইফটের গান চালান এবং সরাসরি বলেন, “তুমি যত চাও রেকর্ড করো, আমি জানি তুমি এটি ইউটিউবে পোস্ট করতে পারবে না।” এ সময় প্রতিবাদকারীদের একজন প্রশ্ন ছুড়ে দেন, এ ধরনের কাজ করতে কোথাও বলা হয়েছে কি না। এর উত্তরে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।”

পরে তিনি আবারও বলেন, “আমি গান ছেড়েছি যাতে তুমি এটি ইউটিউবে পোস্ট না করতে পারো।”

বিবিসি’র প্রতিবেদন বলছে, জুলাইয়ের ১ তারিখে পোস্ট হওয়া ওই ভিডিও এক লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি ‘ভিউ’ পেয়েছে এবং এখনও অনলাইনে আছে। এপিটিপি’র টুইটার পেইজেও ভিডিওটি রয়েছে।

শেরিফের অফিস জানিয়েছে, “আমরা ভিডিওটি দেখেছি এবং এ ব্যাপারে আমাদের অভ্যন্তরীন ব্যুরোকে অবহিত করেছি। এটি যথাযথ ব্যবহার নয়। এরপর এরকম আর হবে না।”

এরকম ঘটনা এবার প্রথম নয়। এর আগে ভাইস নিউজের প্রতিবেদনে উঠে এসেছিল ভিন্ন এক ঘটনা। সেবার পুলিশ কর্মকর্তারা বিটলসের গান বাজিয়েছিলেন। আন্দোলনকারীদের দাবি ছিল, ভিডিও’র সঙ্গে কপিরাইট দাবি জুড়ে দিতেই ওই কাজ করেছিল পুলিশ।

ইউটিউব পেইজে এপিটিপি লিখেছে, “আমরা এর আগেও এ ব্যাপারে শুনেছি, কিন্তু আজকের আগে কেউ-কখনও এটি ভিডিওতে ধারণ করতে পারেনি। এখন আমাদের হাতে যে কেবল ভিডিও প্রমাণ আছে তা নয়, একজন পুলিশের স্বীকারোক্তিও রয়েছে।”

যেভাবে অনলাইনে কপিরাইট প্রয়োগ হয়

কোনো ভিডিও কপিরাইট লঙ্ঘন করছে কি না তা বুঝার জন্য ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মের স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া রয়েছে। এক্ষেত্রে প্ল্যাটফর্মগুলোর নিজ নিজ নিয়মও রয়েছে। প্ল্যাটফর্ম ভেদে নিয়মেও ভিন্নতা রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে ইউটিউবের কথা ধরা যেতে পারে। প্ল্যাটফর্মটির একাধিক কপিরাইট ব্যবস্থাপনা টুল রয়েছে। এরকমই এক সিস্টেমের নাম ‘কনটেন্ট আইডি’।

এর ব্যাখ্যায় সাইটটি লিখে রেখেছে, “ইউটিউবে আপলোড হওয়া ভিডিওকে আমাদের কাছে কনটেন্ট মালিকদের জমা দেওয়া ফাইলের এক ডেটাবেইজের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়।” কপিরাইট মালিকরা এর ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন নতুন ভিডিওর ব্যাপারে কী করা যেতে পারে।

গোটা ব্যাপারটি মূলত অনুমতি ছাড়া অন্যের মেধাস্বত্ত্ব সম্পদ ব্যবহার করে লাভবান হওয়া ঠেকানোর লক্ষ্যে করা। কিন্তু এটিকে পুলিশ যেভাবে ব্যবহার করছে তা অনেকেরই মনোযোগ কেড়েছে।

গত বছর এ বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির লুমেন প্রজেক্টের নিক সিমনস এবং অ্যাডাম হল্যান্ড। লুমেন প্রজেক্ট কপিরাইট কনটেন্ট মুছে দেওয়া নিয়ে কাজ করে থাকে। সিমনস এবং হল্যান্ড উল্লেখ করেছিলেন, ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত কিছু সংখ্যক ভিডিওতে কপিরাইটেড গান থাকায় তা মুছে দেওয়া হয়েছে।

গবেষকরা আরও জানিয়েছিলেন, “আইন প্রয়োগকারী” বা অন্য যারা ভিডিও শেয়ার হওয়া ঠেকাতে চান তাদের শুধু এটি খেয়াল রাখতে হবে যে “কোনো আয়োজন বা আন্দোলনের মধ্যে কপিরাইটেড অডিও বুঝার মতো যথেষ্ট স্পষ্টতা এবং ভলিউম রয়েছে।”





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar