ad720-90

চার দিন ধরে ‘অফলাইনে’ ইরান


দেশটিতে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে শুরু হয় ওই বিক্ষোভ। ইরানে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধের বিষয়টি এরইমধ্যে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এর ফলে দেশটির আট কোটি মানুষ কার্যত অনলাইন যোগাযোগবিচ্ছন্ন হয়ে পড়েছেন।

“আপনি যদি আপনার দেশের ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, তাহলে অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। চাইলে নিজের ইচ্ছানুযায়ী ‘সেন্সর’ও করতে পারবেন।” – বলেছেন ইউনিভার্সিটি অফ সারের সাইবার-নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক অ্যালান উডওয়ার্ড। — খবর বিবিসি’র।

ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রবাসী এবং দেশের বাইরে থাকা ইরানিয়ানরাও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তারা। পরিবার ও বন্ধুদের খবর পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন বলেও জানান ভুক্তভোগীরা।

পুরো বিষয়টি নিয়ে অলাভজনক ইন্টারনেট পর্যবেক্ষক সংস্থা ‘নেটব্লকস’ কর্মী অ্যালপ টোকার বলেছেন, “এটি পুরেপুরি অন্য মাত্রার। বিশ্বব্যাপী আমরা যা হতে দেখি, সেটির সঙ্গে এর কোনো মিল নেই।” টোকার উল্লেখ করেছেন, ইরানের ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা একক কোনো নেটওয়ার্কের উপর নির্ভরশীল নয়। ফলে ইন্টারনেট বন্ধের কাজটি সহজ ছিল না।

বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশের ইন্টারনেট সংযোগ ‘ট্র্যাক’ করার দায়িত্ব পালন করে নেটব্লকস। এ কাজটি করতে রাউটার, সার্ভার, মোবাইল ফোন টাওয়ারের মতো ‘যোগাযোগ ডিভাইসের’ ইন্টারনেট সংযোগ স্ক্যান করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি এবং অনলাইনের আওতায় এসেছে এমন অঞ্চলের ‘ডেটাবেজ’ও রয়েছে অলাভজনক সংস্থাটির কাছে।

নেটব্লকস জানিয়েছে, শনিবার ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া পর দেশটির ইন্টারনেট ট্রাফিক স্বাভাবিক মাত্রা থেকে কমে পাঁচ শতাংশে নেমে এসেছে।

বিবিসি পার্সিয়ানের সাংবাদিক বেহরাং তাজদিন বলেছেন, “শেষ কবে আমরা এরকম ইন্টারনেট ব্ল্যাক আউট দেখেছি তা বলতে পারছি না।” আর প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওরাকলের ইন্টারনেট-নজরদারি সেবা বলছে, “ইরানে এতো বড় আকারে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম।”         

এদিকে, এক নোটে সাংবাদিক তাজদিন জানিয়েছেন, ‘ইন্ট্রানেট’ বা আভ্যন্তরীন নেটওয়ার্ক তৈরির পেছনে বেশ কয়েক বছর ব্যয় করেছে ইরান। নির্ধারিত কিছু সরকারি দপ্তর ও ব্যাংকে সে সংযোগ রয়েছে। এতে করে বহিঃবিশ্বের সঙ্গে ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলেও দেশের ভেতরে ‘অনলাইনে’ থাকার সক্ষমতা রয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলোর।

এ প্রসঙ্গে তাজদিন বলেছেন, “যেসব ওয়েবসাইট ওই নেটওয়ার্কে সংযুক্ত, কেবল সেগুলোতে প্রবেশাধিকার পাওয়া যাচ্ছে। এর মানে হচ্ছে ইরানিয়ান অ্যাপ বা ওয়েবসাইট কাজ করছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক কোনো প্রবেশাধিকার নেই।”  

আভ্যন্তরীন ওই নেটওয়ার্কের বিষয়টি নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে। আশঙ্কা রয়েছে, এ ধরনের নেটওয়ার্কের কারণে আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে দেশটির বর্তমান ‘ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট’।

নেটব্লকস কর্মী টোকারের ভাষ্যে এটি ক্ষতিকর কৌশল। “ভয়াবহ নজির তৈরি করছে ঘটনাটি।”

ইন্টারনেট ‘ব্ল্যাকআউট’ প্রভাব ফেলছে ইরানের অর্থনীতিতেও। হিসেবে প্রতিদিন আনুমানিক ছয় কোটি ডলারের ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন টোকার।





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar