ad720-90

বাংলাদেশ ফাইভ জি সামিট ২০১৮ অনুষ্ঠিত


Wednesday, 25th July , 2018, 09:43 pm,BDST

Print Friendly, PDF & Email


লাস্টনিউজবিডি, ২৫ জুলাই: বাংলাদেশ সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবির সহায়তায় প্রথমবারের মতো ফাইভ জি প্রদর্শন করলো প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। আজ (বুধবার) রাজধানীর প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ফাইফ জি প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়।

এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ফাইভ জি ইকোসিস্টেম কিভাবে কাজ করবে সেটা দেখানো। এছাড়াও বাংলাদেশের অর্থনীতি ও মোবাইল ফোন অপারেটরদের রূপান্তরে ফাইভ জি’র ব্যবহার প্রদর্শন করা হয়। পরবর্তী প্রজন্মেও এই তারহীন প্রযুক্তি মানুষের প্রতিদিনের জীবনধারা পরিবর্তন করতে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। চালকবিহীন গাড়ি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি, বিগ ডাটা, ইন্টারনেট অব থিংকস, স্মার্ট সিটি এবং নেটওয়ার্ক তৈরিতে ফাইভ জি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে।

ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন- ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার, রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা(সিইও) মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, হুয়াওয়ের সাউথ-ইস্ট এশিয়া অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট জেমস উ এবং হুয়াওয়ে টেকনোলজিস(বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ঝ্যাং জেং জুন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ বলেন, ‘যখনই কোনো নতুন প্রযুক্তি আসে, আমি সেটা ব্যবহার করতে চাই। প্রযুক্তিপ্রেমী হিসেবে এটা আমার অভ্যাস। যদিও আমরা ইতোমধ্যে দেশে ফোর জি চালু করছি, কিন্তু আমরা ইতোমধ্যেই ফাইভ জি নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিয়েছি। বাংলাদেশই প্রথম দেশ যেখানে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ১জি থেকে ফোর জি চালু করতে পেরেছে। প্রযুক্তিগত দিক থেকে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ এক সময় বেশ পিছিয়ে ছিল। এখন আমরা কোথায় আছি দেখুন! গত পাঁচ বছরের মধ্যে ইন্টারনেটের মূল্য ৯৯ শতাংশ কমাতে আমি রেগুলেটরদের ওপর চাপ দিয়েছি। এখন বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশে ইন্টারনেটের মূল্য সবচেয়ে কম। অন্য কোনো দেশ এত দ্রুত পরবর্তী প্রজন্মের ইন্টারনেট চালু করতে পারেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ফেব্রুয়ারি মাসে আমরা দেশে ফোর জি চালু করেছি। ইতোমধ্যে আমরা ফাইভ জি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছি। আমার লক্ষ্য বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশেই প্রথম ফাইভ জি চালু করা। আমি চাই বাংলাদেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাক। যদি দেশের মানুষ ভোট দিয়ে আমাদের আবারও ক্ষমতায় আনে তবে আমরা বাংলাদেশে ফাইভ জি চালু করবো। নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশে ফাইভ জি প্রদর্শনের জন্য হুয়াওয়েকে ধন্যবাদ।’

হুয়াওয়ের সাউথইস্ট এশিয়া অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট জেমস উ বলেন, ‘আইসিটি খাতে বাংলাদেশের ব্যাপক প্রবৃদ্ধিতে আমি সব সময়ই উল্লসিত, যা এই অঞ্চলের মানুষের সংযুক্ত করার জন্য একটি সত্যিকারের উদাহারণ হিসেবে থাকবে। ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে হুয়াওয়ে তাদের সহযোগী হিসেবে পাশে পেয়েছে টেলিকম ক্যারিয়ার অংশীদার, স্থানীয় অংশীদার এবং বাংলাদেশের আইসিটি বিভাগকে। আমাদের নতুন নতুন প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি উন্নতমানের পণ্য ও প্রযুক্তি সমাধান এই দেশের ডিজিটাল রূপান্তরে সহায়তা করবে এবং একটি উন্নত ডিজিটাল জীবনধারা নিশ্চিত করবে। আমরা বিশ্বাস করি, ফাইভ জি’র সহায়তায় বাংলাদেশের মানুষ তাদের ডিজিটাল জীবনকে আরও বেশি উপভোগ করতে পারবে।’

অনুষ্ঠানে রবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ফাইভ জি’র মতো নতুন নতুন প্রযুক্তির সহায়তা ছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। একটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য ফাইভ জি আবারও আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আবাসন, যাতায়ত, শিপিং এবং অন্যান্য খাত নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। সুতরাং আমাদের অবশ্যই ফাইভ জি’র বিষয়ে উচ্চাকাক্সক্ষী হতে হবে এবং তবে আমরা টেলিকম খাতে বিদ্যমান সমস্যাগুলোও উপেক্ষা করতে পারি না। তাই এসব সমস্যার সমাধান করেই আমরা সামনে আগাবো। বাস্তব চিত্র হলো, বাংলাদেশে একটি মাত্র মোবাইল অপারেটর কোম্পানি লাভজনক। সুতরাং ফাইভ জি নেটওয়ার্কের জন্য বড় ধরনের বিনিয়োগ আনতে এই ইন্ডাস্ট্রির শেয়ার হোল্ডারদের রাজি করানো খুবই কষ্টকর। মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটররা(এমএনও), প্রযুক্তি বিক্রেতা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং সরকার যদি এক সাথে এগিয়ে আসে তাহলে আমি নিশ্চিত যে, বাংলাদেশে ফাইভ জি বাস্তবায়নে আমরা একটি সহজ উপায় বের করতে পারবো। আজকের ফাইভ জি’র পরীক্ষামূলক প্রদর্শনী এই সমস্যা সমাধানে প্রাথমিক ভিত্তি তৈরি করেছে।’

এই উন্নত নেটওয়ার্ক আগামী ২০২০-২০৩০ সালের মধ্যে ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করবে। নিউ রেডিও অ্যাক্সেস টেকনোলজি (আরএটি) এবং বিদ্যমান তারহীন টেকনোলজি (এলটিই, এইচএসপিএ, জিএসএম এবং ওয়াইফাই) উভয়ের মাধ্যমে ফাইভ জি রেডিও অ্যাক্সেস তৈরি হবে। ফাইভ জি মানুষ এবং সংযুক্ত যন্ত্রাংশের মধ্যে জিরো ডিসটেন্স কানেকটিভিটি সরবরাহ করবে। ফলে মানুষের জীবনের সব বিষয়গুলো সমৃদ্ধ হবে, যা ডিজিটাল প্রযুুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ইতোমধ্যে প্রভাবিত হচ্ছে। শিক্ষা, বাণিজ্য, আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থা, স্বাস্থ্য, ব্যাংকিং এবং যোগাযোগের সব সাধারণ মাধ্যমগুলোতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের মতে, ফাইভ জি’র ব্যবহারে অনেক যুগান্তকারী পরিবর্তনের সুচনা করবে।

হুয়াওয়ে সম্পর্কে
হুয়াওয়ে বিশ্বের অন্যতম তথ্যপ্রযুক্তি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। সমৃদ্ধ জীবন নিশ্চিতকরণ ও উদ্ভাবনী দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি উন্নত ও সংযুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলাই হুয়াওয়ের উদ্দেশ্য। গ্রাহক-কেন্দ্রিক নতুনত্ব এবং উন্মুক্ত অংশীদারিত্বের দ্বারা পরিচালিত হয়ে হুয়াওয়ে একটি পরিপূর্ণ আইসিটি সমাধান পোর্টফোলিও প্রতিষ্ঠা করেছে যা গ্রাহকদের টেলিকম ও এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক, ডিভাইস এবং ক্লাউড কম্পিউটিং-এর সুবিধাসমূহ প্রদান করে। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের ১৭০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে সেবা দিচ্ছে যা বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ জনসংখ্যার সমান। এক লাখ ৮০ হাজার কর্মী নিয়ে ভবিষ্যতের তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সমাজ তৈরির লক্ষ্যে হুয়াওয়ে কাজ করে চলেছে। এই বিশাল সংখ্যক কর্মীরা বিশ্বব্যাপী টেলিকম অপারেটর, উদ্যোক্তা ও গ্রাহকদের সর্বোচ্চ মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

লাস্টনিউজবিডি/এফএ

Print Friendly, PDF & Email





সর্বপ্রথম প্রকাশিত

Sharing is caring!

Comments

So empty here ... leave a comment!

Leave a Reply

Sidebar